feet

যোহনের সুসমাচার

একটি সত্যি গল্প



আল্লাহ্‌র কালাম মানব দেহে মূর্তিমান হলেন

1আদিতে কালাম ছিলেন এবং কালাম আল্লাহ্‌র সঙ্গে ছিলেন এবং কালাম নিজেই আল্লাহ্‌ ছিলেন। 2তিনি আদিতে আল্লাহ্‌র সঙ্গে ছিলেন। 3সকলই তাঁর দ্বারা সৃষ্ট হয়েছিল, যা কিছু সৃষ্টি হয়েছে কিছুই তাঁকে ছাড়া হয় নি। 4তাঁর মধ্যে জীবন ছিল এবং সেই জীবনই ছিল মানুষের নূর। 5আর সেই নূর অন্ধকারের মধ্যে আলো দিচ্ছে, আর সেই অন্ধকার নূরকে জয় করতে পারে নি। 6এক জন মানুষ উপস্থিত হলেন, তিনি আল্লাহ্‌ থেকে প্রেরিত হয়েছিলেন, তাঁর নাম ইয়াহিয়া। 7তিনি সাক্ষ্যের জন্য এসেছিলেন, যেন সেই নূরের বিষয়ে সাক্ষ্য দেন, যেন সকলে তাঁর সাক্ষ্য শুনে ঈমান আনে। 8তিনি নিজে সেই নূর ছিলেন না, কিন্তু আসলেন যেন সেই নূরের বিষয়ে সাক্ষ্য দেন। 9প্রকৃত নূর, যিনি সকল মানুষের মধ্যে নূর দান করেন, তিনি দুনিয়াতে আসছিলেন। 10তিনি দুনিয়াতেই ছিলেন এবং দুনিয়া তাঁর দ্বারাই সৃষ্ট হয়েছিল, আর দুনিয়া তাঁকে চিনলো না। 11তিনি নিজের অধিকারে আসলেন, আর যারা তাঁর নিজের, তারা তাঁকে গ্রহণ করলো না। 12কিন্তু যত লোক তাঁকে গ্রহণ করলো, সেই সকলকে, যারা তাঁর নামে ঈমান আনে তাদেরকে, তিনি আল্লাহ্‌র সন্তান হবার ক্ষমতা দিলেন। 13তারা রক্ত থেকে নয়, দেহের কামনা-বাসনা থেকে নয়, মানুষের ইচ্ছা হতেও নয়, কিন্তু আল্লাহ্‌ থেকে জাত। 14আর সেই কালাম মানব দেহে মূর্তিমান হলেন এবং আমাদের মধ্যে প্রবাস করলেন, আর আমরা তাঁর মহিমা দেখলাম, যেমন পিতা থেকে আগত একজাতের মহিমা; তিনি রহমতে ও সত্যে পূর্ণ। 15ইয়াহিয়া তাঁর বিষয়ে সাক্ষ্য দিলেন, আর উচ্চৈঃস্বরে বললেন, ইনি সেই ব্যক্তি, যাঁর বিষয়ে আমি বলেছি, যিনি আমার পরে আসছেন, তিনি আমার অগ্রগণ্য হলেন, কেননা তিনি আমার আগে ছিলেন। 16কারণ তাঁর পূর্ণতা থেকে আমরা সকলে রহমতের উপরে রহমত পেয়েছি; 17কারণ শরীয়ত মূসার মধ্য দিয়ে দেওয়া হয়েছিল, রহমত ও সত্য ঈসা মসীহের মধ্য দিয়ে উপস্থিত হয়েছে। 18আল্লাহ্‌কে কেউ কখনও দেখে নি; একজাত পুত্র, যিনি পিতার হৃদয়ের কাছে থাকেন, তিনিই তাঁকে প্রকাশ করেছেন।




বায়তুল-মোকাদ্দসে ঈসা মসীহ্

13তখন ইহুদীদের ঈদুল ফেসাখ সন্নিকট ছিল, আর ঈসা জেরুশালেমে গেলেন। 14পরে তিনি বায়তুল-মোকাদ্দসের মধ্যে দেখলেন, লোকে গরু, ভেড়া ও কবুতর বিক্রি করছে এবং মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয়কারীরা বসে আছে; 15তখন ঘাস দ্বারা এক গাছা কশা প্রস্তুত করে গরু, ভেড়া সমস্তই বায়তুল-মোকাদ্দস থেকে বের করে দিলেন এবং টাকা ক্রয়-বিক্রয়কারীদের মুদ্রা ছড়িয়ে দিলেন ও টেবিল উল্টিয়ে ফেললেন; 16আর যারা কবুতর বিক্রি করছিল, তাদেরকে বললেন, এই স্থান থেকে এসব নিয়ে যাও; আমার পিতার গৃহকে ব্যবসার গৃহ করো না। 17তাঁর সাহাবীদের মনে পড়লো যে, লেখা আছে, “তোমার গৃহ-বিষয়ক গভীর আগ্রহ আমাকে গ্রাস করবে।” 18তখন ইহুদীরা জবাবে তাঁকে বললো, তুমি আমাদেরকে কি চিহ্ন-কাজ দেখাচ্ছো যে এসব করছো? 19জবাবে ঈসা তাঁদেরকে বললেন, তোমরা এই এবাদতখানা ভেঙ্গে ফেল, আমি তিন দিনের মধ্যেই তা উঠাবো। 20তখন ইহুদীরা বললো, এই এবাদতখানা নির্মাণ করতে ছেচল্লিশ বছর লেগেছে; তুমি কি তিন দিনের মধ্যে তা উঠাবে? 21কিন্তু তিনি আপন দেহরূপ বায়তুল-মোকাদ্দসের বিষয় বলছিলেন। 22অতএব যখন তিনি মৃতদের মধ্যে থেকে উঠলেন, তখন তাঁর সাহাবীদের মনে পড়লো যে, তিনি এই কথা বলেছিলেন; আর তাঁরা পাক-কিতাবে এবং ঈসার বলা কথায় বিশ্বাস করলেন। 23তিনি ঈদুল ফেসাখের সময়ে যখন জেরুশালেমে ছিলেন, তখন যেসব চিহ্ন-কাজ সাধন করলেন, তা দেখে অনেকে তাঁর নামে ঈমান আনলো। 24কিন্তু এই বিষয়ে ঈসা তাদের বিশ্বাস করলেন না, কারণ তিনি সকলকে জানতেন, 25এবং কেউ যে মানুষের বিষয়ে সাক্ষ্য দেয়, এতে তাঁর প্রয়োজন ছিল না; কেননা মানুষের অন্তরে কি আছে, তা তিনি নিজে জানতেন।



নতুন জন্ম ও ঈমান সম্বন্ধে ঈসা মসীহের শিক্ষা

1ফরীশীদের মধ্যে এক ব্যক্তি ছিলেন, তাঁর নাম নীকদীম; তিনি ইহুদীদের এক জন নেতা। 2তিনি রাতের বেলায় ঈসার কাছে আসলেন এবং তাঁকে বললেন, রব্বি, আমরা জানি, আপনি আল্লাহ্‌র কাছ থেকে আগত শিক্ষক; কেননা আপনি এই যে সব চিহ্ন-কাজ সাধন করছেন, আল্লাহ্‌ সহবর্তী না থাকলে এসব কেউ করতে পারে না। 3জবাবে ঈসা তাঁকে বললেন, সত্যি সত্যি, আমি তোমাকে বলছি, নতুন জন্ম না হলে কেউ আল্লাহ্‌র রাজ্য দেখতে পায় না। 4নীকদীম তাঁকে বললেন, মানুষ বৃদ্ধ হলে কেমন করে তার জন্ম হতে পারে? সে কি দ্বিতীয়বার মায়ের গর্ভে প্রবেশ করে জন্ম নিতে পারে? 5জবাবে ঈসা বললেন, সত্যি সত্যি, আমি তোমাকে বলছি, যদি কেউ পানি এবং রূহ্‌ থেকে না জন্মে, তবে সে আল্লাহ্‌র রাজ্যে প্রবেশ করতে পারে না। 6দেহ থেকে যা জাত, তা দেহই; আর রূহ্‌ থেকে যা জাত, তা রূহ্‌ই। 7আমি যে তোমাকে বললাম, তোমাদের নতুন জন্ম হওয়া আবশ্যক, এতে আশ্চর্য জ্ঞান করো না। 8বায়ু যে দিকে ইচ্ছা করে, সেই দিকে বহে এবং তুমি তার আওয়াজ শুনতে পাও; কিন্তু কোথা থেকে আসে, আর কোথায় চলে যায়, তা জান না; রূহ্‌ থেকে জাত প্রত্যেক জন সেরকম। 9নীকদীম জবাবে তাঁকে বললেন, এসব কিভাবে হতে পারে? 10জবাবে ঈসা তাঁকে বললেন, তুমি ইসরাইলের শিক্ষক হয়েও এসব বুঝতে পারছো না? 11সত্যি সত্যি, আমি তোমাকে বলছি, আমরা যা জানি তা বলি এবং যা দেখেছি তার সাক্ষ্য দিই; আর তোমরা আমাদের সাক্ষ্য গ্রহণ কর না। 12আমি দুনিয়াবী বিষয়ের কথা বললে, তোমরা যদি বিশ্বাস না কর, তবে বেহেশতী বিষয়ের কথা বললে কেমন করে বিশ্বাস করবে? 13আর বেহেশতে কেউ উঠে নি; কেবল যিনি বেহেশতে থাকেন ও বেহেশত থেকে নেমে এসেছেন, সেই ইবনুল-ইনসান ছাড়া। 14আর মূসা যেমন মরুভূমিতে সেই সাপকে উঁচুতে উঠিয়েছিলেন, তেমনি ইবনুল-ইনসানকেও উঁচুতে তোলা হতে হবে, 15যেন, যে কেউ তাঁতে ঈমান আনে, সে অনন্ত জীবন পায়। 16কারণ আল্লাহ্‌ দুনিয়াকে এমন মহব্বত করলেন যে, তাঁর এক জাত পুত্রকে দান করলেন, যেন যে কেউ তাঁতে ঈমান আনে সে বিনষ্ট না হয়, কিন্তু অনন্ত জীবন পায়। 17কেননা আল্লাহ্‌ দুনিয়ার বিচার করতে পুত্রকে দুনিয়াতে প্রেরণ করেন নি, কিন্তু দুনিয়া যেন তাঁর দ্বারা নাজাত পায় সেজন্য তিনি তাঁকে প্রেরণ করেছেন। 18যে তাঁতে ঈমান আনে, তার বিচার করা যায় না; যে ঈমান আনে না, তাঁর বিচার হয়ে গেছে, যেহেতু সে আল্লাহ্‌র এক জাত পুত্রের নামে ঈমান আনে নি। 19আর সেই বিচার এই যে, দুনিয়াতে নূর এসেছে এবং মানুষেরা নূর থেকে অন্ধকার বেশি ভালবাসলো, কেননা তাদের কাজগুলো মন্দ ছিল। 20কারণ যে কেউ মন্দ আচরণ করে, সে নূর ঘৃণা করে এবং সে নূরের কাছে আসে না, পাছে তার কাজগুলোর দোষ প্রকাশিত হয়ে পরে। 21কিন্তু যে যা সত্যি তা পালন করে, সে নূরের কাছে আসে, যেন তার কাজগুলো আল্লাহ্‌র ইচ্ছামত সাধিত বলে প্রকাশ পায়।



ঈসা মসীহ্‌ ও সামেরিয়ার এক জন স্ত্রীলোক

1ঈসা যখন জানলেন যে, ফরীশীরা শুনেছে, ‘ঈসা ইয়াহিয়ার চেয়ে বেশি সাহাবী করেন এবং বাপ্তিস্ম দেন’— 2কিন্তু ঈসা নিজে বাপ্তিস্ম দিতেন না, তাঁর সাহাবীরাই দিতেন— 3তখন তিনি এহুদিয়া ত্যাগ করলেন এবং পুনর্বার গালীলে চলে গেলেন, 4আর সামেরিয়ার মধ্য দিয়ে তাঁকে যেতে হল। 5তাতে তিনি শুখর নামক সামেরিয়ার একটি নগরের কাছে গেলেন; ইয়াকুব তাঁর পুত্র ইউসুফকে যে ভূমি দান করেছিলেন, সেই নগর তার নিকটবর্তী। 6আর সেই স্থানে ইয়াকুবের কূপ ছিল। তখন তিনি পথশ্রান্ত হওয়াতে সেই কূপের পাশেই বসলেন। বেলা তখন অনুমান ষষ্ঠ ঘটিকা। সামেরিয়ার এক জন স্ত্রীলোক সেই কূপ থেকে পানি তুলতে আসল। 7ঈসা তাকে বললেন, আমাকে পান করার পানি দাও। 8কেননা তাঁর সাহাবীরা খাদ্য ক্রয় করতে নগরে গিয়েছিলেন। 9তাতে সামেরীয় স্ত্রীলোকটি বললো, আপনি ইহুদী হয়ে কেমন করে আমার কাছে পান করার পানি চাচ্ছেন? আমি তো সামেরীয় স্ত্রীলোক। —কেননা সামেরীয়দের সঙ্গে ইহুদীদের কোন দেওয়া-নেওয়ার সম্পর্ক নেই।— 10জবাবে ঈসা তাকে বললেন, তুমি যদি জানতে, আল্লাহ্‌র দান কি, আর কে তোমাকে বলছে, ‘আমাকে পান করার পানি দাও’, তবে তাঁরই কাছে তুমি যাচ্ঞা করতে এবং তিনি তোমাকে জীবন্ত পানি দিতেন। 11স্ত্রীলোকটি তাঁকে বললো, হুজুর, পানি তুলবার কোন পাত্র আপনার কাছে নেই, কূপটিও গভীর; তবে সেই জীবন্ত পানি কোথা থেকে পেলেন? 12আমাদের পূর্ব-পুরুষ ইয়াকুব থেকে কি আপনি মহান? তিনিই আমাদেরকে এই কূপ দিয়েছেন, আর এর পানি তিনি নিজে ও তাঁর পুত্ররা পান করতেন, তাঁর পশুপালও পান করতো। 13জবাবে ঈসা তাকে বললেন, যে কেউ এই পানি পান করে, তার আবার পিপাসা পাবে; 14কিন্তু আমি যে পানি দেব, তা যে কেউ পান করে, তার পিপাসা আর কখনও হবে না; বরং আমি তাকে যে পানি দেব, তা তার অন্তরে এমন পানির ফোয়ারা হবে, যা অনন্ত জীবন পর্যন্ত উথলে উঠবে। 15স্ত্রীলোকটি তাঁকে বললো, হুজুর, সেই পানি আমাকে দিন, যেন আমার পিপাসা না পায় এবং পানি তুলবার জন্য এতটা পথ হেঁটে আসতে না হয়। 16ঈসা তাকে বললেন, যাও, তোমার স্বামীকে এখানে ডেকে নিয়ে এসো। 17স্ত্রীলোকটি জবাবে তাঁকে বললো, আমার স্বামী নেই। 18ঈসা তাকে বললেন, তুমি ভালই বলেছ তোমার স্বামী নেই; কেননা ইতোমধ্যে তোমার পাঁচটি স্বামী হয়ে গেছে, আর এখন তোমার যে আছে, সে তোমার স্বামী নয়; এই কথা সত্যি বলেছ। 19স্ত্রীলোকটি তাঁকে বললো, হুজুর, আমি দেখছি যে, আপনি এক জন নবী। 20আমাদের পূর্বপুরুষেরা এই পর্বতে এবাদত করতেন, আর আপনারা বলে থাকেন, যে স্থানে এবাদত করা উচিত, সে স্থানটি জেরুশালেমেই আছে। 21ঈসা তাকে বলেন, হে নারী, আমার কথায় বিশ্বাস কর; এমন সময় আসছে, যখন তোমরা না এই পর্বতে, না জেরুশালেমে পিতার এবাদত করবে। 22তোমরা যা জান না, তার এবাদত করছো; আমরা যা জানি, তার এবাদত করছি, কারণ ইহুদীদের মধ্য দিয়েই নাজাত পাবার উপায় এসেছে। 23কিন্তু এমন সময় আসছে, বরং এখনই উপস্থিত, যখন প্রকৃত এবাদতকারীরা রূহে ও সত্যে পিতার এবাদত করবে; কারণ বাস্তবিক পিতা এরকম এবাদতকারীদেরই খোঁজ করেন। 24আল্লাহ্‌ রূহ্‌; আর যারা তাঁর এবাদত করে, তাদেরকে রূহে ও সত্যে এবাদত করতে হবে। 25স্ত্রীলোকটি তাঁকে বললো, আমি জানি, মসীহ্‌, যাঁকে অভিষিক্ত বলে, তিনি আসছেন, তিনি যখন আসবেন, তখন আমাদেরকে সকলই জানাবেন। 26ঈসা তাকে বললেন, তোমার সঙ্গে কথা বলছি যে আমি, আমিই তিনি। 27এই সময় তাঁর সাহাবীরা আসলেন এবং আশ্চর্য হলেন যে, তিনি এক জন স্ত্রীলোকের সঙ্গে কথা বলছেন, তবুও কেউ বললেন না আপনি কি চান? কিংবা, কি জন্য ওর সঙ্গে কথা বলছেন? 28তখন সেই স্ত্রীলোকটি নিজের কলসী ফেলে রেখে নগরে গেল, 29আর লোকদেরকে বললো, এসো, এক জন মানুষকে দেখ, আমি যা কিছু করেছি, তিনি সকলই আমাকে বলে দিলেন; তিনিই কি সেই মসীহ্‌ নন? 30তারা নগর থেকে বের হয়ে তাঁর কাছে আসতে লাগল। 31ইতোমধ্যে সাহাবীরা তাঁকে ফরিয়াদ করে বললেন, রব্বি, আহার করুন। 32কিন্তু তিনি তাঁদেরকে বললেন, খাবারের জন্য আমার এমন খাদ্য আছে, যা তোমরা জান না। 33অতএব সাহাবীরা পরস্পর বলতে লাগলেন, কেউ কি তাঁকে খাদ্য এনে দিয়েছে? 34ঈসা তাঁদেরকে বললেন, আমার খাদ্য এই, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, যেন তাঁর ইচ্ছা পালন করি ও তাঁর কাজ সাধন করি। 35তোমরা কি বল না, আর চার মাস পরে শস্য কাটার সময় হবে? দেখ, আমি তোমাদেরকে বলছি, চোখ তুলে ক্ষেতের প্রতি দৃষ্টিপাত কর, শস্য এখনই কাটার মত সাদা রংয়ের হয়েছে। 36যে কাটে সে বেতন পায় এবং অনন্ত জীবনের জন্য শস্য সংগ্রহ করে; যেন, যে বুনে ও যে কাটে, উভয়ে একত্র আনন্দ করে। 37কেননা এই স্থলে এই কথা সত্যি, এক জন বুনে, আর এক জন কাটে। 38আমি তোমাদেরকে এমন শস্য কাটতে প্রেরণ করলাম, যার জন্য তোমরা পরিশ্রম কর নি; অন্যেরা পরিশ্রম করেছে এবং তোমরা তাদের শ্রম-ক্ষেত্রে প্রবেশ করেছ। 39সেই নগরের সামেরীয়রা অনেকে সেই স্ত্রীলোকটি যে সাক্ষ্য দিয়েছিল— আমি যা কিছু করেছি, তিনি আমাকে সকলই বলে দিলেন— তার এই কথার জন্য তাঁর উপর ঈমান আনলো। 40অতএব সেই সামেরিয়েরা যখন তাঁর কাছে আসল, তখন তাঁকে ফরিয়াদ করলো, যেন তিনি তাদের কাছে অবস্থিতি করেন; তাতে তিনি দুই দিন সেখানে অবস্থান করলেন। 41তখন আরও অনেক লোক তাঁর কথা শুনে তাঁর উপর ঈমান আনলো; 42আর তারা সেই স্ত্রীলোককে বললো, এখন যে আমরা ঈমান এনেছি, তা তোমার কথা শুনে নয়, কেননা আমরা নিজেরা শুনেছি ও জানতে পেরেছি যে, ইনি সত্যিই দুনিয়ার নাজাতদাতা।



পুত্রের কর্তৃত্ব

19অতএব জবাবে ঈসা তাদেরকে বললেন, সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদেরকে বলছি, পুত্র নিজ থেকে কিছুই করতে পারে না, কেবল পিতাকে যা করতে দেখেন, তা-ই করেন; কেননা তিনি যা যা করেন, পুত্রও তা-ই করেন। 20কারণ পিতা পুত্রকে ভাল-বাসেন এবং তিনি যা যা করেন, সকলই তাঁকে দেখান; আর এর চেয়েও মহৎ মহৎ কাজ তাঁকে দেখাবেন, যেন তোমরা আশ্চর্য মনে কর। 21কেননা পিতা যেমন মৃতদেরকে উঠান ও জীবন দান করেন, তেমনি পুত্রও যাদেরকে ইচ্ছা, জীবন দান করেন। 22পিতা কারো বিচার করেন না, কিন্তু বিচারের সমস্ত ভার পুত্রকে দিয়েছেন, 23যেন সকলে যেমন পিতাকে সমাদর করে, তেমনি পুত্রকে সমাদর করে। পুত্রকে যে সমাদর করে না, যিনি তাঁকে পাঠিয়েছেন সে পিতাকেও সমাদর করে না। 24সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদেরকে বলছি, যে ব্যক্তি আমার কালাম শুনে ও যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁর উপর ঈমান আনে, সে অনন্ত জীবন পেয়েছে এবং তাকে বিচারে আনা হবে না; সে মৃত্যু থেকে জীবনে পার হয়ে গেছে। 25সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদেরকে বলছি, এমন সময় আসছে, বরং এখন উপস্থিত, যখন মৃতেরা আল্লাহ্‌র পুত্রের কণ্ঠস্বর শুনবে এবং যারা শুনবে, তারা জীবিত হবে। 26কেননা পিতা যেমন জীবনের অধিকারী, তেমনি তিনি পুত্রকেও জীবনের অধিকারী হতে দিয়েছেন। 27আর তিনি তাঁকে বিচার করার অধিকার দিয়েছেন, কেননা তিনি ইবনুল-ইনসান। 28এতে আশ্চর্য মনে করো না; কেননা এমন সময় আসছে, যখন কবরস্থ সকলে তাঁর স্বর শুনবে, 29এবং যারা সৎকর্ম করেছে, তারা জীবনের পুনরুত্থানের জন্য ও যারা অসৎকর্ম করেছে, তারা বিচারের পুনরুত্থানের জন্য বের হয়ে আসবে।



বেহেশতী খাদ্য

25আর সমুদ্রের পারে তাঁকে পেয়ে বললো, রব্বি, আপনি এখানে কখন এসেছেন? 26ঈসা তাদেরকে জবাবে বললেন, সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদেরকে বলছি, তোমরা চিহ্ন-কাজ দেখেছো বলে আমার খোঁজ করছো, তা নয়; কিন্তু সেই রুটি খেয়েছিলে ও তৃপ্ত হয়েছিলে বলেই আমার খোঁজ করছো। 27যে খাদ্য নষ্ট হয়ে যায় সেই খাদ্যের জন্য পরিশ্রম করো না, কিন্তু সেই খাদ্যের জন্য পরিশ্রম কর, যা অনন্ত জীবন পর্যন্ত থাকে, যা ইবনুল-ইনসান তোমাদেরকে দেবেন, কেননা পিতা-আল্লাহ্‌ তাঁকেই সীলমোহরকৃত করেছেন। 28তখন তারা তাঁকে বললো, আমরা যেন আল্লাহ্‌র কাজ করতে পারি, এজন্য আমাদেরকে কি করতে হবে? 29জবাবে ঈসা তাঁদেরকে বললেন, আল্লাহ্‌র কাজ এই, যেন তাঁতে তোমরা ঈমান আনো, যাঁকে তিনি প্রেরণ করেছেন। 30তারা তাঁকে বললো, ভাল, আপনি এমন কি চিহ্ন-কাজ করছেন, যা দেখে আমরা আপনার উপর ঈমান আনবো? আপনি কি কাজ করছেন? 31আমাদের পূর্বপুরুষেরা মরুভূমিতে মান্না খাইয়েছিলেন, যেমন লেখা আছে, “তিনি ভোজনের জন্য তাদেরকে বেহেশত থেকে খাদ্য দিলেন।” 32ঈসা তাদেরকে বললেন, সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদেরকে বলছি, মূসা তোমাদেরকে বেহেশত থেকে সেই খাদ্য দেন নি, কিন্তু আমার পিতাই তোমাদেরকে বেহেশত থেকে প্রকৃত খাদ্য দেন। 33কেননা আল্লাহ্‌র খাদ্য তা-ই, যা বেহেশত থেকে নেমে আসে ও দুনিয়াকে জীবন দান করে। 34তখন তারা তাঁকে বললো, হুজুর, চিরকাল সেই খাদ্য আমাদেরকে দিন। 35ঈসা তাদেরকে বললেন, আমিই সেই জীবন-খাদ্য। যে ব্যক্তি আমার কাছে আসে, সে ক্ষুধার্ত হবে না এবং যে আমাতে ঈমান আনে, সে তৃষ্ণার্ত হবে না, কখনও না। 36কিন্তু আমি তোমাদেরকে বলেছি যে, তোমরা আমাকে দেখেছো, তবুও ঈমান আন নি। 37পিতা যাদের আমাকে দেন, তারা আমারই কাছে আসবে এবং যে আমার কাছে আসবে, তাকে আমি কোন মতে বাইরে ফেলে দেব না। 38কেননা আমার ইচ্ছা সাধন করার জন্য আমি বেহেশত থেকে নেমে আসি নি; কিন্তু যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তাঁরই ইচ্ছা সাধন করার জন্য এসেছি। 39আর যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তাঁর ইচ্ছা এই, তিনি আমাকে যে সমস্ত লোকদের দিয়েছেন, তাদের কাউকেই যেন না হারাই, কিন্তু শেষ দিনে জীবিত করে তুলি। 40কারণ আমার পিতার ইচ্ছা এই, যে কেউ পুত্রকে দর্শন করে ও তাঁতে ঈমান আনে, সে যেন অনন্ত জীবন পায়; আর আমিই তাঁকে শেষ দিনে জীবিত করে তুলব। 41অতএব ইহুদীরা তাঁর বিষয়ে বচসা করতে লাগল, কেননা তিনি বলেছিলেন, আমিই সেই খাদ্য, যা বেহেশত থেকে নেমে এসেছে। 42তারা বললো, এ কি ইউসুফের পুত্র সেই ঈসা নয়, যার পিতামাতাকে আমরা জানি? তবে এ কেমন করে বলে, আমি বেহেশত থেকে নেমে এসেছি? 43জবাবে ঈসা তাঁদেরকে বললেন, তোমরা পরস্পর বচসা করো না। 44পিতা, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তিনি আকর্ষণ না করলে কেউ আমার কাছে আসতে পারে না, আর আমি তাকে শেষ দিনে জীবিত করে তুলব। 45নবীদের কিতাবে লেখা আছে, “তারা সকলে আল্লাহ্‌র কাছে শিক্ষা পাবে।” যে কেউ পিতার কাছে শুনে শিক্ষা পেয়েছে, সেই আমার কাছে আসে। 46কেউ যে পিতাকে দেখেছে, তা নয়; যিনি আল্লাহ্‌র কাছ থেকে এসেছেন, কেবল তিনিই পিতাকে দেখেছেন। 47সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদেরকে বলছি, যে ঈমান আনে, সে অনন্ত জীবন পেয়েছে। 48আমিই জীবন-খাদ্য। 49তোমাদের পূর্বপুরুষেরা মরু-ভূমিতে মান্না খেয়েছিল, আর তারা ইন্তেকাল করেছে। 50এ সেই খাদ্য, যা বেহেশত থেকে নেমে আসে, যেন লোকে তা খায় ও মারা না যায়। 51আমিই সেই জীবন্ত খাদ্য, যা বেহেশত থেকে নেমে এসেছে। কেউ যদি এই খাদ্য খায়, তবে সে অনন্তকাল জীবিত থাকবে, আর আমি দুনিয়ার জীবনের জন্য যে খাদ্য দেব, তা আমার শরীর। 52অতএব ইহুদীরা পরস্পর তর্ক করে বলতে লাগল, এই ব্যক্তি কেমন করে আমাদেরকে ভোজনের জন্য নিজের শরীর দিতে পারে? 53ঈসা তাদেরকে বললেন, সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদেরকে বলছি, তোমরা যদি ইবনুল-ইনসানের গোশ্‌ত ভোজন ও তাঁর রক্ত পান না কর, তোমাদের মধ্যে জীবন নেই। 54যে আমার গোশ্‌ত ভোজন ও আমার রক্ত পান করে, সে অনন্ত জীবন পেয়েছে এবং আমি তাকে শেষ দিনে জীবিত করে তুলব। 55কারণ আমার গোশ্‌ত প্রকৃত খাদ্য এবং আমার রক্ত প্রকৃত পানীয়। 56যে আমার গোশ্‌ত ভোজন ও আমার রক্ত পান করে, সে আমার মধ্যে থাকে এবং আমি তার মধ্যে থাকি। 57যেমন জীবন্ত পিতা আমাকে প্রেরণ করেছেন এবং পিতার কারণে আমি জীবিত আছি, ঠিক সেভাবে যে কেউ আমাকে ভোজন করে, সেও আমার কারণে জীবিত থাকবে। 58এ সেই খাদ্য, যা বেহেশত থেকে নেমে এসেছে; পূর্বপুরুষেরা যেমন খেয়েছিল এবং মারা গিয়েছিল, সেরকম নয়; এই খাদ্য যে ভোজন করে, সে অনন্তকাল জীবিত থাকবে। 59এসব কথা তিনি কফরনাহূমে উপদেশ দেবার সময়ে মজলিস-খানায় বললেন।



ঈসা মসীহ্‌ দুনিয়ার নূর

12আবার ঈসা লোকদের কাছে কথা বললেন, তিনি বললেন, আমি দুনিয়ার নূর; যে আমাকে অনুসরণ করে, সে কোন মতে অন্ধকারে চলবে না, কিন্তু জীবনের নূর পাবে। 13তাতে ফরীশীরা তাঁকে বললো, তুমি তোমার নিজের বিষয়ে নিজে সাক্ষ্য দিচ্ছ; তোমার সাক্ষ্য সত্যি নয়। 14জবাবে ঈসা তাদেরকে বললেন, যদিও আমি আমার বিষয়ে নিজে সাক্ষ্য দিই, তবুও আমার সাক্ষ্য সত্যি; কারণ আমি কোথা থেকে এসেছি, কোথায়ই বা যাচ্ছি, তা জানি; কিন্তু আমি কোথা থেকে এসেছি, আর কোথায়ই বা যাচ্ছি, তা তোমরা জান না। 15মানুষ যেভাবে বিচার করে তোমরাও সেইভাবে বিচার করছো; আমি কারো বিচার করি না। 16আর যদিও আমি বিচার করি, আমার বিচার সত্যি, কেননা আমি একা নই, কিন্তু আমি আছি এবং পিতা আছেন, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন। 17আর তোমাদের শরীয়তেও লেখা আছে, দু’জনের সাক্ষ্য সত্যি। 18আমি নিজে আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দিই, আর পিতা, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তিনি আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেন। 19তখন তারা তাঁকে বললো, তোমার পিতা কোথায়? জবাবে ঈসা বললেন, তোমরা আমাকেও জান না, আমার পিতাকেও জান না; যদি আমাকে জানতে, আমার পিতাকেও জানতে। 20এসব কথা তিনি বায়তুল-মোকাদ্দসে উপদেশ দেবার সময়ে ভাণ্ডার-গৃহে বললেন; এবং কেউ তাঁকে ধরলো না, কারণ তখনও তাঁর সময় উপস্থিত হয় নি।



ঈসা মসীহ্‌ এক জন জন্মান্ধকে দৃষ্টিশক্তি দান করেন

1আর তিনি যেতে যেতে একটি লোককে দেখতে পেলেন, সে জন্ম থেকে অন্ধ। 2তাঁর সাহাবীরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, রব্বি, কে গুনাহ্‌ করেছিল, এই ব্যক্তি, না এর পিতা-মাতা, যাতে এই লোকটি অন্ধ হয়ে জন্মেছে? 3জবাবে ঈসা বললেন, গুনাহ্‌ এ করেছে, কিংবা এর পিতা-মাতা করেছে, তা নয়; কিন্তু এই ব্যক্তিতে আল্লাহ্‌র কাজ যেন প্রকাশিত হয়, তাই এমন হয়েছে। 4যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন দিন থাকতে থাকতে তাঁর কাজ আমাদেরকে করতে হবে; রাত আসছে, তখন কেউ কাজ করতে পারে না। 5আমি যতদিন দুনিয়াতে আছি, আমিই দুনিয়ার নূর। 6এই কথা বলে তিনি ভূমিতে থুথু ফেলে তা দিয়ে কাদা করলেন; পরে ঐ ব্যক্তির চোখে সেই কাদা লেপন করলেন ও তাকে বললেন, 7শীলোহ সরোবরে যাও, ধুয়ে ফেল; অনুবাদ করলে এই নামের অর্থ ‘প্রেরিত’। তখন সে গিয়ে ধুয়ে ফেললো এবং দেখতে পেয়ে ফিরে আসল। 8তখন প্রতিবেশীরা এবং যারা আগে তাকে দেখেছিল যে, সে ভিক্ষা করতো, তারা বলতে লাগল, এ কি সে নয়, যে বসে ভিক্ষা চাইত? 9কেউ কেউ বললো, না, কিন্তু তারই মত; সে বললো, আমিই সে। 10তখন তারা তাকে বললো, তবে কিভাবে তোমার চোখ খুলে গেল? 11সে জবাবে বললো, ঈসা নামে সেই ব্যক্তি কাদা করে আমার চোখে লেপন করলেন, আর আমাকে বললেন, শীলোহে যাও, ধুয়ে ফেল; তাতে আমি গিয়ে ধুয়ে ফেললে দৃষ্টি পেলাম। 12তারা তাকে বললো, সেই ব্যক্তি কোথায়? সে জবাবে বললো, তা জানি না।



ঈসা মসীহ্‌ই উত্তম মেষপালক

7অতএব ঈসা পুনর্বার তাদেরকে বললেন, সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদেরকে বলছি, আমিই মেষদের দ্বার। 8যারা আমার আগে এসেছিল, তারা সকলে চোর ও দস্যু, কিন্তু মেষেরা তাদের কথা শুনে নি। 9আমিই দ্বার, আমার মধ্য দিয়ে যদি কেউ প্রবেশ করে, সে নাজাত পাবে এবং ভিতরে আসবে ও বাইরে যাবে ও চরানি পাবে। 10চোর আসে, কেবল যেন চুরি, খুন ও বিনাশ করতে পারে; আমি এসেছি, যেন তারা জীবন পায় ও জীবনের উপচয় পায়। 11আমিই উত্তম মেষপালক; উত্তম মেষপালক মেষদের জন্য আপন প্রাণ সমর্পণ করে। 12যে বেতনজীবী, মেষপালক নয়, মেষগুলো যার নিজের নয়, সে নেকড়ে বাঘ আসতে দেখলে মেষগুলো ফেলে পালিয়ে যায়; তাতে নেকড়ে বাঘ মেষগুলোকে ধরে নিয়ে যায় ও তারা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে; 13সে পালিয়ে যায়, কারণ সে বেতনজীবী, মেষগুলোর জন্য চিন্তা করে না। 14আমিই উত্তম মেষপালক; আমার নিজের সকলকে আমি জানি এবং আমার নিজের সকলে আমাকে জানে, 15যেমন পিতা আমাকে জনেন ও আমি পিতাকে জানি; এবং মেষদের জন্য আমি আপন প্রাণ সমর্পণ করি। 16আমার আরও মেষ আছে, সেসব এই খোঁয়াড়ের নয়; তাদেরকেও আমার আনতে হবে এবং তারা আমার কণ্ঠস্বর শুনবে, তাতে এক পাল ও এক পালক হবে। 17পিতা আমাকে এজন্য মহব্বত করেন, কারণ আমি আপন প্রাণ সমর্পণ করি, যেন পুনরায় তা গ্রহণ করি। 18কেউ আমার কাছ থেকে তা হরণ করে না, বরং আমি নিজে থেকেই তা সমর্পণ করি। তা সমর্পণ করতে আমার ক্ষমতা আছে এবং পুনরায় তা গ্রহণ করতেও আমার ক্ষমতা আছে; এই হুকুম আমি আমার পিতার কাছ থেকে পেয়েছি। 19এসব কথার জন্য ইহুদীদের মধ্যে পুনরায় মতভেদ দেখা দিল। 20তাদের মধ্যে অনেকে বললো, একে বদ-রূহে পেয়েছে ও সে পাগল, এর কথা কেন শুনছো? 21অন্যেরা বললো, এসব তো বদ-রূহে পাওয়া লোকের কথা নয়; বদ-রূহ্‌ কি অন্ধদের চোখ খুলে দিতে পারে?



গ্রীকরা ঈসা মসীহ্‌কে দেখতে চায়

20যারা এবাদত করার জন্য ঈদে এসেছিল, তাদের মধ্যে কয়েক জন গ্রীকও ছিল; 21এরা গালীলের বৈৎসৈদা-নিবাসী ফিলিপের কাছে এসে তাঁকে ফরিয়াদ করলো, হুজুর, আমরা ঈসাকে দেখতে ইচ্ছা করি। 22ফিলিপ এসে আন্দ্রিয়কে বললেন, আন্দ্রিয় ও ফিলিপ এসে ঈসাকে বললেন। 23তখন জবাবে ঈসা তাদেরকে বললেন, সময় উপস্থিত, যেন ইবনুল-ইনসান মহিমান্বিত হন। 24সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদেরকে বলছি, গমের বীজ যদি মাটিতে পড়ে না মরে, তবে তা একটিমাত্র থাকে; কিন্তু যদি মরে, তবে অনেক ফল উৎপন্ন করে। 25যে আপন প্রাণ ভালবাসে, সে তা হারায়; আর যে এই দুনিয়াতে আপন প্রাণ অপ্রিয় জ্ঞান করে, সে অনন্ত জীবনের জন্য তা রক্ষা করবে। 26কেউ যদি আমার পরিচর্যা করে, তবে সে আমার অনুসারী হোক; তাতে আমি যেখানে থাকি আমার পরিচারকও সেখানে থাকবে; কেউ যদি আমার পরিচর্যা করে, তবে পিতা তার সম্মান করবেন।



ঈসা মসীহের ‘নতুন হুকুম’

31সে বাইরে গেলে পর ঈসা বললেন, এখন ইবনুল-ইনসান মহিমান্বিত হলেন এবং আল্লাহ্‌ তাঁর মধ্যে মহিমান্বিত হলেন। 32আল্লাহ্‌ যখন তাঁর মধ্যে মহিমান্বিত হলেন, তখন আল্লাহ্‌ও তাঁকে তাঁর নিজের মধ্যে মহিমান্বিত করবেন, আর শীঘ্রই তাঁকে মহিমান্বিত করবেন। 33সন্তানেরা, এখনও অল্পকাল আমি তোমাদের সঙ্গে আছি; তোমরা আমার খোঁজ করবে, আর আমি যেমন ইহুদীদেরকে বলেছিলাম। ‘আমি যেখানে যাচ্ছি, সেখানে তোমরা যেতে পার না,’ তেমনি তোমাদেরকেও এখন তা-ই বলছি। 34একটি নতুন হুকুম আমি তোমাদেরকে দিচ্ছি, তোমরা পরস্পর মহব্বত কর; আমি যেমন তোমাদেরকে মহব্বত করেছি, তোমরাও তেমনি পরস্পর মহব্বত কর। 35তোমরা যদি নিজেদের মধ্যে পরস্পর মহব্বত রাখ, তবে তাতেই সকলে জানবে যে, তোমরা আমার সাহাবী।



ঈসা মসীহ্‌ই পথ

1তোমাদের মন অস্থির না হোক; আল্লাহ্‌র উপরে বিশ্বাস কর, আমাতেও বিশ্বাস কর। 2আমার পিতার বাড়িতে অনেক বাসস্থান আছে, যদি না থাকতো, তোমাদেরকে বলতাম; কেননা আমি তোমাদের জন্য স্থান প্রস্তুত করতে যাচ্ছি। 3আর আমি যখন যাই ও তোমাদের জন্য স্থান প্রস্তুত করি, তখন পুনর্বার আসবো এবং আমার কাছে তোমাদেরকে নিয়ে যাব; যেন, আমি যেখানে থাকি, তোমরাও সেখানে থাক। 4আর আমি যেখানে যাচ্ছি, তোমরা তার পথ জান। 5থোমা তাঁকে বললেন, প্রভু, আপনি কোথায় যাচ্ছেন, তা আমরা জানি না, পথ কিসে জানবো? 6ঈসা তাকে বললেন, আমিই পথ ও সত্য ও জীবন; আমার মধ্য দিয়ে না আসলে কেউ পিতার কাছে আসতে পারে না। 7যদি তোমরা আমাকে জানতে, তবে আমার পিতাকেও জানতে; এখন থেকে তাঁকে জানছো এবং দেখেছো। 8ফিলিপ তাঁকে বললেন, প্রভু, পিতাকে আমাদের দেখান, তা-ই আমাদের যথেষ্ট। 9ঈসা তাঁকে বললেন, ফিলিপ, এতদিন আমি তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি, তবুও কি তুমি আমাকে জান না? যে আমাকে দেখেছে, সে পিতাকে দেখেছে; তুমি কেমন করে বলছো পিতাকে আমাদের দেখান? 10তুমি কি বিশ্বাস কর না যে, আমি পিতার মধ্যে আছি এবং পিতা আমার মধ্যে আছেন? আমি তোমাদেরকে যেসব কথা বলি, তা নিজের থেকে বলি না; কিন্তু পিতা আমার মধ্যে থেকে তাঁর কাজগুলো সাধন করেন। 11আমার কথায় বিশ্বাস কর যে, আমি পিতার মধ্যে আছি এবং পিতা আমার মধ্যে আছেন; তা না হলে অন্ততঃ আমার এই সব কাজের জন্য আমাকে বিশ্বাস কর। 12সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদেরকে বলছি, যে আমার উপর ঈমান আনে, আমি যেসব কাজ করছি, সেও তা করবে, এমন কি এসব হতেও বড় বড় কাজ করবে; কেননা আমি পিতার কাছে যাচ্ছি; 13আর তোমরা আমার নামে যা কিছু যাচ্ঞা করবে, তা আমি সাধন করবো, যেন পিতা পুত্রে মহিমান্বিত হন। 14যদি আমার নামে আমার কাছে কিছু যাচ্ঞা কর, তবে আমি তা করবো।

সত্যের রূহ্‌ সাহাবীদের সহায়

15তোমরা যদি আমাকে মহব্বত কর, তবে আমার হুকুমগুলো পালন করবে। 16আর আমি পিতার কাছে নিবেদন করবো এবং তিনি আর এক জন সহায় তোমাদেরকে দেবেন, যেন তিনি চিরকাল তোমাদের সঙ্গে থাকেন; তিনি সত্যের রূহ্‌; 17দুনিয়া তাঁকে গ্রহণ করতে পারে না, কেননা সে তাঁকে দেখতে পায় না, তাঁকে জানেও না; তোমরা তাঁকে জান, কারণ তিনি তোমাদের কাছে অবস্থিতি করেন ও তোমাদের অন্তরে থাকবেন। 18আমি তোমাদেরকে এতিম অবস্থায় রেখে যাব না, আমি তোমাদের কাছে আসছি। 19আর অল্প কাল গেলে দুনিয়া আর আমাকে দেখতে পাবে না, কিন্তু তোমরা দেখতে পাবে; কারণ আমি জীবিত আছি; এজন্য তোমরাও জীবিত থাকবে। 20সেদিন তোমরা জানবে যে, আমি আমার পিতার মধ্যে আছি ও তোমরা আমার মধ্যে আছ এবং আমি তোমাদের মধ্যে আছি। 21যে ব্যক্তি আমার হুকুমগুলো পেয়ে সেসব পালন করে, সে আমাকে মহব্বত করে; আর যে আমাকে মহব্বত করে, আমার পিতা তাকে মহব্বত করবেন এবং আমিও তাকে মহব্বত করবো, আর নিজেকে তার কাছে প্রকাশ করবো। 22তখন এহুদা— ঈষ্করিয়োতীয় নয়— তাঁকে বললেন, প্রভু, কি হয়েছে যে, আপনি আমাদেরই কাছে নিজেকে প্রকাশ করবেন, আর দুনিয়ার কাছে নয়? 23জবাবে ঈসা তাঁকে বললেন, কেউ যদি আমাকে মহব্বত করে, তবে সে আমার কালামগুলো পালন করবে; আর আমার পিতা তাকে মহব্বত করবেন এবং আমরা তার কাছে আসবো ও তার সঙ্গে বাস করবো। 24যে আমাকে মহব্বত করে না, সে আমার কালামগুলো পালন করে না। আর তোমরা যে কালাম শুনতে পাচ্ছ, তা আমার নয়, কিন্তু পিতার, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন। 25তোমাদের কাছে থাকতে থাকতেই আমি এসব কথা বললাম। 26কিন্তু সেই সহায়, পাক-রূহ্‌, যাঁকে পিতা আমার নামে পাঠিয়ে দেবেন, তিনি সমস্ত বিষয়ে তোমাদেরকে শিক্ষা দেবেন এবং আমি তোমাদেরকে যা যা বলেছি, সেসব স্মরণ করিয়ে দেবেন। 27শান্তি আমি তোমাদের কাছে রেখে যাচ্ছি, আমারই শান্তি তোমাদেরকে দান করছি; দুনিয়া যেভাবে দান করে, আমি সেভাবে দান করি না। তোমাদের হৃদয় অস্থির না হোক, ভীতও না হোক। 28তোমরা শুনেছ যে, আমি তোমাদেরকে বলেছি, আমি যাচ্ছি, আবার তোমাদের কাছে আসছি। যদি তোমরা আমাকে মহব্বত করতে, তবে আনন্দ করতে যে, আমি পিতার কাছে যাচ্ছি; কারণ পিতা আমার চেয়ে মহান। 29আর এখন, ঘটবার আগে, আমি তোমাদেরকে বললাম, যেন ঘটলে পর তোমরা বিশ্বাস কর। 30আমি তোমাদের সঙ্গে আর বেশি কথা বলবো না; কারণ দুনিয়ার অধিপতি আসছে, আর আমার উপর তার কোন ক্ষমতা নেই; 31কিন্তু দুনিয়া যেন জানতে পায় যে, আমি পিতাকে মহব্বত করি এবং পিতা আমাকে যেমন হুকুম দিয়েছেন, আমি তেমনই করে থাকি। উঠ, আমরা এই স্থান থেকে প্রস্থান করি।



ঈসা মসীহ্‌ প্রকৃত আঙ্গুরলতা

1আমি প্রকৃত আঙ্গুরলতা এবং আমার পিতা কৃষক। 2আমার মধ্যে স্থিত যে কোন শাখায় ফল না ধরে, তা তিনি কেটে ফেলে দেন; এবং যে কোন শাখায় ফল ধরে, তা তিনি পরিষ্কার করেন, যেন তাতে আরও বেশি ফল ধরে। 3আমি তোমাদেরকে যে কথা বলেছি, তার জন্য তোমরা এখন পরিষ্কৃত আছ। 4আমার মধ্যে থাক, আর আমি তোমাদের মধ্যে থাকি; ডাল যেমন আঙ্গুরলতায় যুক্ত না থাকলে নিজে নিজে ফল ধরতে পারে না, তেমনি আমার মধ্যে না থাকলে তোমরাও ফল ধরাতে পার না। 5আমি আঙ্গুরলতা, তোমরা শাখা; যে আমার মধ্যে থাকে এবং যাতে আমি থাকি, সেই ব্যক্তি প্রচুর ফলে ফলবান হয়; কেননা আমাকে ছাড়া তোমরা কিছুই করতে পার না। 6কেউ যদি আমার মধ্যে না থাকে, তা হলে শাখার মত তাকে বাইরে ফেলে দেওয়া যায় ও সে শুকিয়ে যায়; এবং লোকে সেগুলো কুড়িয়ে আগুনে ফেলে দেয়, আর সেসব পুড়ে যায়। 7তোমরা যদি আমার মধ্যে থাক এবং আমার কালাম যদি তোমাদের মধ্যে থাকে, তবে তোমাদের যা ইচ্ছা হয়, যাচ্ঞা করো, তোমাদের জন্য তা করা যাবে। 8এতেই আমার পিতা মহিমান্বিত হন যে, তোমরা প্রচুর ফলে ফলবান হও; আর তোমরা আমার সাহাবী হবে। 9পিতা যেমন আমাকে মহব্বত করেছেন, আমিও তেমনি তোমাদেরকে মহব্বত করেছি; তোমরা আমার মহব্বতে অবস্থিতি কর। 10তোমরা যদি আমার হুকুমগুলো পালন কর, তবে আমার মহব্বতে অবস্থিতি করবে, যেমন আমিও আমার পিতার হুকুমগুলো পালন করেছি এবং তাঁর মহব্বতে অবস্থিতি করছি। 11এসব কথা তোমাদেরকে বলেছি, যেন আমার আনন্দ তোমাদের মধ্যে থাকে এবং তোমাদের আনন্দ সমপূর্ণ হয়। 12আমার হুকুম এই, তোমরা পরস্পর মহব্বত কর, যেমন আমি তোমাদেরকে মহব্বত করেছি। 13কেউ যদি আপন বন্ধুদের জন্য নিজের প্রাণ দেয়, তবে তার চেয়ে বেশি মহব্বত কারো নেই। 14আমি তোমাদেরকে যে সমস্ত হুকুম দিচ্ছি, তা যদি পালন কর, তবে তোমরা আমার বন্ধু। 15আমি তোমাদেরকে আর গোলাম বলি না, কেননা প্রভু কি করেন, গোলাম তা জানে না; কিন্তু তোমাদেরকে আমি বন্ধু বলেছি, কারণ আমার পিতার কাছে যা যা শুনেছি, সকলই তোমাদেরকে জানিয়েছি। 16তোমরা যে আমাকে মনোনীত করেছ, এমন নয়, কিন্তু আমিই তোমাদেরকে মনোনীত করেছি; আর আমি তোমাদেরকে নিযুক্ত করেছি, যেন তোমরা গিয়ে ফলবান হও এবং তোমাদের ফল যেন থাকে; যেন তোমরা আমার নামে পিতার কাছে যা কিছু যাচ্ঞা করবে, তা তিনি তোমাদেরকে দেন। 17এসব তোমাদেরকে হুকুম করছি, যেন তোমরা পরস্পর মহব্বত কর।



সাহাবীদের জন্য ঈসা মসীহের মুনাজাত

1ঈসা এসব কথা বললেন, আর বেহেশতের দিকে চোখ তুলে বললেন, পিতা, সময় উপস্থিত হল; তোমার পুত্রকে মহিমান্বিত কর, যেন পুত্র তোমাকে মহিমান্বিত করেন। 2তুমি তাঁকে মানুষের উপরে কর্তৃত্ব দিয়েছ, যেন, তুমি যে সমস্ত লোকদের তাঁর হাতে দিয়েছ, তিনি তাদেরকে অনন্ত জীবন দেন। 3আর এ-ই অনন্ত জীবন যে, তারা তোমাকে, একমাত্র সত্যময় আল্লাহ্‌কে এবং তুমি যাঁকে পাঠিয়েছ, তাঁকে, ঈসা মসীহ্‌কে, জানতে পায়। 4তুমি আমাকে যে কাজ করতে দিয়েছ, তা সমাপ্ত করে আমি দুনিয়াতে তোমাকে মহিমান্বিত করেছি। 5আর এখন, হে আমার পিতা, দুনিয়া সৃষ্টি হবার আগে তোমার কাছে আমার যে মহিমা ছিল, তুমি সেই মহিমায় তোমার নিজের কাছে আমাকে মহিমান্বিত কর। 6দুনিয়ার মধ্য থেকে তুমি আমাকে যে লোকদের দিয়েছ, আমি তাদের কাছে তোমার নাম প্রকাশ করেছি। তারা তোমারই ছিল এবং তাদের তুমি আমাকে দিয়েছ, আর তারা তোমার কালাম পালন করেছে। 7এখন তারা জানতে পেরেছে যে, তুমি আমাকে যা কিছু দিয়েছ, সে সবই তোমার কাছ থেকে এসেছে; 8কেননা তুমি আমাকে যেসব কালাম দিয়েছ, তা আমি তাদেরকে দিয়েছি; আর তারা গ্রহণও করেছে এবং সত্যিই জেনেছে যে, আমি তোমার কাছ থেকে এসেছি এবং বিশ্বাস করেছে যে, তুমি আমাকে প্রেরণ করেছ। 9আমি তাদেরই জন্য নিবেদন করছি; দুনিয়ার জন্য নিবেদন করছি না, কিন্তু যাদেরকে আমায় দিয়েছ, তাদের জন্য নিবেদন করছি; কেননা তারা তোমারই। 10আর আমার সকলই তোমার ও তোমার সকলই আমার; আর আমি তাদের মধ্যে মহিমান্বিত হয়েছি। 11আমি আর দুনিয়াতে নেই, কিন্তু এরা দুনিয়াতে রয়েছে এবং আমি তোমার কাছে আসছি। পবিত্র পিতা, তোমার নামে তাদেরকে রক্ষা কর, —যে নাম তুমি আমাকে দিয়েছ— যেন তারা এক হয়, যেমন আমরা এক। 12তাদের সঙ্গে থাকতে থাকতে আমি তাদেরকে তোমার নামে রক্ষা করে এসেছি— যে নাম তুমি আমাকে দিয়েছ— আমি তাদেরকে সাবধানে রেখেছি, তাদের মধ্যে কেউ বিনষ্ট হয় নি, কেবল সেই বিনাশ-সন্তান বিনষ্ট হয়েছে, যেন পাক-কিতাবের কালাম পূর্ণ হয়। 13কিন্তু এখন আমি তোমার কাছে আসছি, আর দুনিয়াতে এসব কথা বলছি, যেন তারা আমার আনন্দ তাদের মধ্যে সমপূর্ণরূপে পায়। 14আমি তাদেরকে তোমার কালাম দিয়েছি; আর দুনিয়া তাদেরকে ঘৃণা করেছে, কারণ তারা দুনিয়ার নয়, যেমন আমিও দুনিয়ার নই। 15আমি নিবেদন করছি না যে, তুমি তাদেরকে দুনিয়া থেকে নিয়ে যাও, কিন্তু তাদেরকে সেই শয়তানের হাত থেকে রক্ষা কর। 16তারা দুনিয়ার নয়, যেমন আমিও দুনিয়ার নই। 17তাদেরকে সত্যে পবিত্র কর; তোমার কালামই সত্যস্বরূপ। 18তুমি যেমন আমাকে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছ, তেমনি আমিও তাদেরকে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছি। 19আর তাদের জন্য আমি নিজেকে পবিত্র করি, যেন তারাও সত্যিই পবিত্রীকৃত হয়। 20আর আমি কেবল তাদেরই জন্য নিবেদন করছি তা নয়, কিন্তু এদের কথার মধ্য দিয়ে যারা আমার উপর ঈমান আনে, তাদের জন্যও করছি; যেন তারা সকলে এক হয়। 21পিতা, যেমন তুমি আমার মধ্যে ও আমি তোমার মধ্যে, তেমনি তারাও যেন আমাদের মধ্যে থাকে; যেন দুনিয়া বিশ্বাস করে যে, তুমি আমাকে প্রেরণ করেছ। 22আর তুমি আমাকে যে মহিমা দিয়েছ, তা আমি তাদেরকে দিয়েছি; যেন তারাও এক হয়, যেমন আমরা এক; 23আমি তাদের মধ্যে ও তুমি আমার মধ্যে, যেন তারা সিদ্ধ হয়ে এক হয়; যেন দুনিয়া জানতে পারে যে, তুমি আমাকে প্রেরণ করেছ এবং আমাকে যেমন মহব্বত করেছ, তাদেরকেও মহব্বত করেছ। 24পিতা, আমার ইচ্ছা এই, আমি যেখানে থাকি, তুমি আমায় যাদেরকে দিয়েছ, তারাও যেন সেখানে আমার সঙ্গে থাকে, যেন তারা আমার সেই মহিমা দেখতে পায়, যা তুমি আমাকে দিয়েছ, কেননা দুনিয়া পত্তনের আগে তুমি আমাকে মহব্বত করেছিলে। 25ধর্মময় পিতা, দুনিয়া তোমাকে জানে নি, কিন্তু আমি তোমাকে জানি এবং এরা জেনেছে যে, তুমিই আমাকে প্রেরণ করেছ। 26আর আমি এদেরকে তোমার নাম জানিয়েছি ও জানাবো; যেন তুমি যে মহব্বতে আমাকে মহব্বত করেছ, তা তাদের মধ্যে থাকে এবং আমি তাদের মধ্যে থাকি।



ক্রুশের উপর ঈসা মসীহ্‌

28এর পরে ঈসা, সমস্তই এখন সমাপ্ত হল জেনে পাক-কিতাবের কালাম যেন সিদ্ধ হয়, এজন্য বললেন, ‘আমার পিপাসা পেয়েছে’। 29সেই স্থানে সিরকায় পূর্ণ একটি পাত্র ছিল; তাতে লোকেরা সিরকায় পূর্ণ একটি স্পঞ্জ এসোব নলে লাগিয়ে তাঁর মুখের কাছ ধরলো। 30সিরকা গ্রহণ করার পর ঈসা বললেন, ‘সমাপ্ত হল’; পরে মাথা নত করে রূহ্‌ সমর্পণ করলেন। 31সেদিন আয়োজন দিন, অতএব বিশ্রামবারে সেই দেহগুলো যেন ক্রুশের উপরে না থাকে— কেননা ঐ বিশ্রামবার মহাদিন ছিল— এজন্য ইহুদীরা পীলাতের কাছে নিবেদন করলো, যেন তাদের পা ভেঙ্গে তাদেরকে অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। 32অতএব সৈন্যেরা এসে ঐ প্রথম ব্যক্তির এবং তার সঙ্গে ক্রুশে বিদ্ধ অন্য ব্যক্তির পা ভাঙ্গল; 33কিন্তু তারা যখন ঈসার কাছে এসে দেখলো যে, তিনি ইন্তেকাল করেছেন, তখন তাঁর পা ভাঙ্গল না। 34কিন্তু এক জন সৈন্য বর্শা দিয়ে তাঁর পাঁজরে খোঁচা মারল; আর তাতে তখনই সেখান থেকে রক্ত ও পানি বের হয়ে আসল। 35যে ব্যক্তি দেখেছে, সে সাক্ষ্য দিয়েছে এবং তার সাক্ষ্য যথার্থ; আর সে জানে যে, সে সত্যি বলছে, যেন তোমরাও বিশ্বাস কর। 36কারণ এসব ঘটলো, যেন পাক-কিতাবের এই কালাম পূর্ণ হয়, “তাঁর একখানি অস্থিও ভাঙ্গা হবে না।” 37আবার পাক-কিতাবের আর একটি কথা এই, “তারা যাঁকে বিদ্ধ করেছে, তাঁর প্রতি দৃষ্টিপাত করবে।”



ঈসা মসীহ্‌ সাহাবীদের দেখা দেন

19সেদিন সপ্তাহের প্রথম দিন, সন্ধ্যা হলে, সাহাবীরা যেখানে ছিলেন, সেই স্থানের দরজাগুলো ইহুদীদের ভয়ে বন্ধ ছিল; এমন সময়ে ঈসা এসে মধ্যস্থানে দাঁড়ালেন এবং তাঁদেরকে বললেন, তোমাদের শান্তি হোক; 20এই বলে তিনি তাঁদেরকে তাঁর দুই হাত ও পাঁজর দেখালেন। অতএব প্রভুকে দেখতে পেয়ে সাহাবীরা আনন্দিত হলেন। 21তখন ঈসা আবার তাঁদেরকে বললেন, তোমাদের শান্তি হোক; পিতা যেমন আমাকে প্রেরণ করেছেন, তেমনি আমিও তোমাদেরকে প্রেরণ করি। 22এই বলে তিনি তাঁদের উপরে ফুঁ দিলেন, আর তাঁদেরকে বললেন, পাক-রূহ্‌ গ্রহণ কর; 23তোমরা যাদের গুনাহ্‌ মাফ করবে, তাদের গুনাহ্‌ মাফ হবে; যাদের গুনাহ্‌ মাফ করবে না, তাদের গুনাহ্‌ মাফ হবে না।